সুদীর্ঘ বছরের প্রতীক্ষার পর ২০১৮ সালের ৩রা মার্চ, ত্রিপুরা রাজ্যে ২৫ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের অবসান ঘটে এবং রাজ্যে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার ক্ষমতায় আসে।

বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর-পর রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতেও এর ছাপ পড়ে এবং রাতা-রাতি ক্ষমতার পালা বদল ঘটে। এরই অঙ্গ হিসেবে, উত্তর ত্রিপুরা জেলার যুবরাজনগর ব্লকের অন্তর্গত শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেও দেখা যায়। প্রথমে গণহারে পদত্যাগ করানো হয় তারপর উপ-নির্বাচনের নামে বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় (মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করিয়ে) গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল এবং পরবর্তীতে তথাকথিত পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করে বিজেপি।

আশ্চর্যজনক ভাবে শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা বিজেপির দখলে যাওয়ার পর থেকেই কিছু বিরল ঘটনা লক্ষ্য করা গেছে, যেমন ৩রা মার্চ ২০১৮ সাল থেকে ৩১শে মার্চ ২০২১ সাল অবধি সময়ের মধ্যে শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে কোন ওয়ার্ড সংসদ, কোন গ্রাম সংসদ হয় নাই! এমন কি প্রতিটি আর্থিক বছরের শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বার্ষিক হিসাবের কোন বই প্রকাশ ও জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হয় নাই! ভারত সরকারের আইনকে তোয়াক্কা না করে বছর-পর-বছর একই ভাবে চলে আসছে।

অবশেষে আমি তথ্য জানার অধিকার আইনের মাধ্যমে শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০১৯-২০২০ অর্থ-বৎসরের গ্রাম-সভার বই পাওয়ার আবেদন করি। আমার আবেদন সাপেক্ষে, আমাকে কম্পিউটার প্রিন্টের মাধ্যমে গ্রাম-সভার বই একটি কপি সরবরাহ করা হয়। বইটিতে প্রাকশিত তথ্য অসম্পূর্ণ, তথ্য গোপন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে বলে আমার ধারনা।

শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০১৯-২০২০ অর্থ-বৎসরের গ্রাম-সভার বই এ প্রকাশিত তথ্যের বিস্তারিত যাচাই করার মাধ্যমে যে তথ্য আমার গোচরে এসেছে, তা হল, PDF/SAMITI FUND/TFC/FFC/OWN SOURCES এর মাধ্যমে যে পরিমাণ অর্থ শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে প্রদান করা হয়েছে তাতে লাগামহীন আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। আমার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এটা স্পষ্ট হয়েছে ২০১৯-২০২০ইং অর্থ-বৎসরে মোট ফান্ডের ৮০% শতাংশ অর্থ ভুয়ো ওয়ার্ক-অর্ডার বানিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে বলে আমার ধারনা। আদালতের তত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির প্রকৃত তথ্য সামনে আসবে বলে আমি মনে করি।

 
CR007450CU00633

full-width